১৩৬৩ নং হাদিস সহীহ মুসলিম (ইফাঃ) । । আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যাক্তি পছন্দ করে যে, আগামীকাল বিচার দিবসে সে মুসলমান হিসাবে আল্লাহ সাক্ষাত লাভ করবে, তার উচিত এই সালাতসমুহের সংরক্ষণ করা, যেখানে সালাতের জন্য আহবান করা হয় (অর্থাৎ মসজিদে)। কারণ, আল্লাহ তোমাদের নবীকে হিদায়াতের সকল পথ বাতলে দিয়েছেন। আর এই সমস্ত সালাত হল হিদায়াতের পথ সমুহের অন্যতম। তোমরা যদি এই সকল সালাত ঘরে আদায় কর, যেমন একদল লোক জামাআত ছেড়ে ঘরে সালাত আদায় করে, তাহলে তোমরা তোমাদের নবীর সূন্নাতকে ছেড়ে দিলে। তোমরা যদি নবীর সূন্নাত ছেড়ে দাও, তাহলে তোমরা অবশ্যই গুমরাহ হয়ে যাবে।
যে উত্তমরুপে পবিত্র হয়ে এই সকল মসজিদের একটির দিকে অগ্রসর হবে তার প্রত্যেক কদমের জন্য একটি করে নেকী লেখা হবে এবং তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং একটি গুনাহ মাফ করা হবে।
তারপর (হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জমানায়) একমাত্র প্রকাশ্য মুনাফিক ছাড়া আর কাউকে জামাআত থেকে বাদ পড়তে আমরা দেখিনি (সাধারণ মুনাফিকরাও জামায়াত ছাড়িয়া দেয়ার সাহস করিত না)।
অনেক লোক দু’ জনের কাঁধে ভর করে হেচঁড়িয়ে হেচঁড়িয়ে মসজিদে আসত এবং তাদের সারিতে দাঁড় করিয়া দেয়া হতো।
১৩৬২ নং হাদিস সহীহ মুসলিম (ইফাঃ) । । আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমরা দেখেছি যে, সেই সমস্ত মুনাফিক, যাদের মুনাফিকী সম্পর্কে জানাজানি হয়ে পড়েছিল তারা এবং রোগী ব্যাক্তিরা ব্যতীত অন্য কেউ জামা’আতে অনুপস্থিত থাকে না; যে সব রোগী দুই জনের কাঁধে ভর করে চলতে সক্ষম তারাও জামাআতে শরীক হতো। তারপর আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে হিদায়াতের রীতিনীতি শিক্ষা দিয়েছেন। এই সকল রিতিনিতির একটি হল সেই মসজিদে সালাত আদায় করা যেখানে আযান দেয়া হয়েছে।
৫৪৭ নং হাদিস আবু দাউদ (ইফাঃ) । । আহমদ ইবনু ইউনুস ………… আবূদ-দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কে বলতে শুনেছিঃ যখন কোন গ্রামে বা বনজঙ্গলে তিনজন লোক একত্রিত হয় এবং জামাআতে নামায আদায় না করে-তখন শয়তান তাদের উপর প্রভুত্ব বিস্তার করে। অতএব (তোমরা) অবশ্যই জামাআতের সাথে নামায আদায় কর। কেননা দলচ্যুত বকরীকে নেকড়ে বাঘে ভক্ষণ করে থাকে- (নাসাঈ)। রাবী আস-সায়েব বলেন, এখানে জামাআত অর্থ জামাআতের সাথে নামায আদায় করা।
৫৪৮ নং হাদিস আবু দাউদ (ইফাঃ) । । উছমান ইবনু আবূ শায়বা ………….. আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ﷺ ইরশাদ করেছেনঃ আমার ইচ্ছা হয় যে, লোকদেরকে জামাআতের সাথে নামায আদায়ের নির্দেশ দেই এবং তাদের জন্য একজন ইমাম নিযুক্ত করি। অতঃপর আমি কাষ্ঠ বহনকারী একটি দল আমার সাথে নিয়ে ঐ লোকদের নিকট যাই যারা জামাআতে শরীক হয়নি। অতঃপর তাদের ঘর-বাড়ি জালিয়ে দেই- (বুখারী, মুসলিম, ইবনু মাজাহ, তিরমিযী- নাসাঈ)।
৫৪৯ নং হাদিস আবু দাউদ (ইফাঃ) । । আন-নুফায়লী ……….. আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ আমার ইচ্ছা হয় যে, আমি কিছু সংখ্যক যুবককে কাষ্ঠ সংগ্রহের নির্দেশ দেই। অতঃপর যারা বিনা কারণে নামাযের জামাআতে অনুপস্হিত থাকে তাদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে ভষ্মিভুত করে দেই। রাবী বলেন, আমি ইয়াযীদ ইবনু আসিমকে জিজ্ঞেস করি- হে আবূ আওফ! এ দ্বারা কি কেবলমাত্র জুমুআর জামাআতের প্রতি ইংগিত করা হয়েছে? তিনি বলেন, তা আমি সঠিকভাবে জ্ঞাত নই। কেননা আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ ﷺ – হতে জুমুআ অথবা অন্য কোন নামাযের জন্য নির্দিষ্ট ভাবে বলতে শুনিনি (অতএব এ দ্বারা স্পষ্ট প্রতিয়মান হয় যে, পাচ ওয়াক্তের নামাযের জন্য জামাআতে হাযির হওয়া কর্তব্য- (মুসলিম, তিরমিযী)।
৫৫০ নং হাদিস আবু দাউদ (ইফাঃ) । । হারূন ইবনু আবাদ ………… আবদুল্লাহ ইবনু মাস্উদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমরা এই পাঁচ ওয়াক্তের নামায ঠিকভাবে আযানের সাথে হেফাযত কর। কেননা এই নামাযসমূহ হিদায়াতের অন্তর্ভুক্ত। মহান আল্লাহ্ নবী ﷺ এর জন্য তা ফরয ও হিদায়াতের বাহন হিসেবে নির্ধারিত করেছেন।
রাবী বলেন, আমরা তো দেখেছি যে, প্রকাশ্য মুনাফিকরা ব্যতীত জামাআতে কেউই অনুপস্হিত থাকত না। আমরা আরো দেখেছি যে, দুর্বল ও অক্ষম ব্যক্তি দু’জনের উপর ভর করে মসজিদে এসে জামাআতে নামায আদায়ের জন্য কাতারবদ্ধ হত। তোমাদের প্রত্যেকের (সুন্নাত ও নফল) নামায আদায়ের জন্য নিজ নিজ ঘরে নামাযের স্থান আছে। যদি তোমরা মসজিদ ত্যাগ করে নিজ নিজ আবাসে ফরয নামায আদায় কর তবে তোমরা তোমাদের নবীর সুন্নাত ত্যাগকারী হিসেবে বিবেচিত হবে। আর যদি তোমরা তোমাদের নবীর সুন্নাত পরিহার কর তবে অবশ্যই তোমরা পথভ্রষ্ট হবে- (মুসলিম, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ)।
৫৫১ নং হাদিস আবু দাউদ (ইফাঃ) । । কুতায়বা ……….. ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মুআয্যিনের আযান শুনে বিনা কারণে মসজিদে উপস্হিত হয়ে জামাআতে নামায আদায় করবে না তার অনত্র আদায়কৃত নামায আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না (অর্থাৎ তার নামাযকে পরিপূর্ণ নামায হিসেবে গণ্য করা হবে না)। সাহাবীরা ওজর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেনঃ যদি কেউ ভয়ভীতি ও অসুস্থতার কারণে জামাআতে হাযির হতে অক্ষম হয় তবে তার জন্য বাড়ীতে নামায পড়া দুষণীয় নয়- (ইবনু মাজাহ)।
৫৫২ নং হাদিস আবু দাউদ (ইফাঃ) । । সুলায়মান ইবনু হারব ——— ইবনু উম্মে মাকতুম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী ﷺকে জিজ্ঞেস করেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমি অন্ধ তদুপরি মসজিদও আমার ঘর হতে অনেক দূরে, কিন্তু আমাকে মসজিদে আনা নেওয়ার জন্য লোক আছে। এমতাবস্হায় আমি কি ঘরে (ফরয) নামায আদায় করতে পারি? নবী ﷺ জিজ্ঞেস করেনঃ তুমি কি আযান শুনতে পাও? আমি বলি, হাঁ। নবী ﷺ বলেনঃ আমি তোমার জন্য (জামাআত) থেকে অব্যাহতির কোন কারণ পাচ্ছি না- ইবনু মাজাহ, মুসলিম, নাসাঈ)।
৫৫৩ নং হাদিস আবু দাউদ (ইফাঃ) । । হারূন ইবনু যায়েদ ……………. ইবনু উম্মে মাকতুম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্ মদীনা শহরে অনেক বিষাক্ত ও হিংস্র প্রাণী আছে যার দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আশংকা আছে এমতাবস্হায় জামাআতে হাযির হওয়ার ব্যাপারে আমার করণীয় কি? তিনি বলেনঃ তুমি কি আযানের হাইয়া আলাস-সালাহ্ ও হাইয়া আলাল-ফালাহ্ শুনতে পাও? আমি বলি হাঁ। তিনি বলেনঃ তুমি তার জবাব দাও (জামাআতে হাযির হও) – (নাসাঈ, ইবনু মাজাহ)।





