রিযিকের মালিক আল্লাহ আজ্জা ওয়াজাল স্বয়ং। রিযিকের পিছনে ছুটার জন্য আল্লাহ আমাদের মানা করেননি যদিও আমার এই চেষ্টার সাথে রিযিকের সম্পর্ক ওতটুকুই যতটুকু আল্লাহ আজ্জা ওয়াজাল আমার তকদীরে লিখে রেখেছেন। অপরদিকে আল্লাহ, দুনিয়া উনার ইচ্ছা অনুযায়ী যাকে ইচ্ছা যতটুকু ইচ্ছা দান করেন।
আর আখিরাত; সেটা আল্লাহ আজ্জা ওয়াজাল আমাদের চেষ্টার সাথেই সম্পর্কিত করে দিয়েছেন। বান্দা তার চেষ্টা অনুযায়ী আখিরাতে ফল পাবে। আর আখিরাতকে যে প্রাধান্য দিবে দুনিয়াও তার জন্য আল্লাহ আজ্জা ওয়াজাল সহজ করে দিবেন।
একটু চিন্তা করি, আমাদের চেষ্টার সিংহভাগ কার জন্য হওয়া উচিৎ vs. কার জন্য করছি আমরা।
নিচের আয়াতগুলো একটু দেখি এই বিষয়ের উপর:
যে কেউ ইহকাল কামনা করে, আমি সেসব লোককে যা ইচ্ছা সত্ত্বর দিয়ে দেই। অতঃপর তাদের জন্যে জাহান্নাম নির্ধারণ করি। ওরা তাতে নিন্দিত-বিতাড়িত অবস্থায় প্রবেশ করবে। আর যারা পরকাল কামনা করে এবং মুমিন অবস্থায় তার জন্য যথাযথ চেষ্টা-সাধনা করে, এমন লোকদের চেষ্টা স্বীকৃত হয়ে থাকে। (১৭:১৮-১৯)
বলুন, আমার পালনকর্তা তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং সীমিত পরিমাণে দেন। তোমরা যা কিছু ব্যয় কর, তিনি তার বিনিময় দেন। তিনি উত্তম রিযিক দাতা। (৩৪:৩৯)
যে কেউ পরকালের ফসল কামনা করে, আমি তার জন্যে সেই ফসল বাড়িয়ে দেই। আর যে ইহকালের ফসল কামনা করে, আমি তাকে তার কিছু দিয়ে দেই এবং পরকালে তার কোন অংশ থাকবে না। (৪২:২০)
আকাশ ও পৃথিবীর চাবি তাঁর কাছে। তিনি যার জন্যে ইচ্ছা রিযিক বৃদ্ধি করেন এবং পরিমিত করেন। তিনি সর্ব বিষয়ে জ্ঞানী। (৪২:১২)
আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন। এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন। (৬৫:২-৩)
এমন অনেক জন্তু আছে, যারা তাদের খাদ্য সঞ্চিত রাখে না। আল্লাহই রিযিক দেন তাদেরকে এবং তোমাদেরকেও। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (২৯:৬০)
আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিযিক প্রশস্ত করে দেন এবং যার জন্য ইচ্ছা হ্রাস করেন। নিশ্চয়, আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত। (২৯:৬২)
এই পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক বৈ তো কিছুই নয়। পরকালের গৃহই প্রকৃত জীবন; যদি তারা জানত। (২৯:৬৪)
যারা আমার পথে সাধনায় আত্মনিয়োগ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত করব। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের সাথে আছেন। (২৯:৬৯)
পরিশেষে এমন একটা আয়াত যেখানে স্বয়ং আল্লাহ আজ্জা ওয়াজাল বলে দিচ্ছেন:
যারা মুমিন, তাদের জন্যে কি আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য অবর্তীর্ণ হয়েছে, তার কারণে হৃদয় বিগলিত হওয়ার সময় আসেনি? তারা তাদের মত যেন না হয়, যাদেরকে পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল। তাদের উপর সুদীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হয়েছে, অতঃপর তাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশই পাপাচারী। (৫৭:১৬)
আল্লাহ উপরোক্ত আয়াতগুলোর মর্ম বুঝে সেই অনুযায়ী আমাদের কর্মপদ্ধতি ঠিক করার তৌফিক দান করেন।






