বন্ধু নির্বাচনে সতর্কতামূলক কিছু হাদিস:
আবু দাউদ শরীফ ৪৭৫৭ (ইফা)। আমর ইবন আওন (রহঃ) ……… আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী ﷺ বলেছেনঃ মু’মিন ব্যক্তি ছাড়া আর কারো সাথী হবে না। আর মুত্তাকী ব্যতীত অন্য কেউ যেন তোমার খাবার না খায়।
আবু দাউদ শরীফ ৪৭৫৮ (ইফা)। ইবন বাশশার (রহঃ) ……… আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী করীম ﷺ বলেছেনঃ ব্যক্তি তাঁর বন্ধুর দীনের অনুসারী হয়। কাজেই, তোমাদের দেখা উচিত, কার সাথে বন্ধুত্ব করছো।
মুসনাদে আহমাদ থেকে মিশকাতে। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত , তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মানুষ তার বন্ধুর দ্বীনের অনুসারী হয়ে থাকে। অতএব, তোমাদের কেউ বন্ধু নির্বাচন করার পূর্বে লক্ষ করা উচিত,সে কার সাথে বন্ধুত্ব করছে।
বুখারী ও মুসলিম থেকে মিশকাতে। আবু মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছন, সৎ সঙ্গী এবং অসৎ সঙ্গীর দৃষ্টান্ত হচ্ছে সুগন্ধি বহনকারী ও লোহার হাপর চালনাকারীর অনুরূপ। সুগন্ধির বাহক হয় তোমাকে কিছু দেবে, অথবা তুমি তার কাছ থেকে কিছু ক্রয় করবে অথবা তার সুঘ্রাণ পাবে। পক্ষান্তরে, হাপর চালনাকারী হয় তোমার কাপড় জ্বালিয়ে দেবে অথবা তুমি দুর্গন্ধের সম্মুখীন হবে।
একই বিষয়ে কোরানের কিছু আয়াত:
বন্ধুত্ব কাদের সাথে নয়
মুমিনগন যেন অন্য মুমিনকে ছেড়ে কেন কাফেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যারা এরূপ করবে আল্লাহর সাথে তাদের কেন সম্পর্ক থাকবে না। (3 :: 28)
হে ঈমানদারগণ! তোমরা কাফেরদেরকে বন্ধু বানিও না মুসলমানদের বাদ দিয়ে। তোমরা কি এমনটি করে নিজের উপর আল্লাহর প্রকাশ্য দলীল কায়েম করে দেবে? (4 :: 144)
হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। (5 :: 51)
হে মুমিনগণ, আহলে কিতাবদের মধ্য থেকে যারা তোমাদের ধর্মকে উপহাস ও খেলা মনে করে, তাদেরকে এবং অন্যান্য কাফেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না। আল্লাহকে ভয় কর, যদি তোমরা ঈমানদার হও। (5 :: 57)
মুমিনগন যেন অন্য মুমিনকে ছেড়ে কেন কাফেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যারা এরূপ করবে আল্লাহর সাথে তাদের কেন সম্পর্ক থাকবে না। তবে যদি তোমরা তাদের পক্ষ থেকে কোন অনিষ্টের আশঙ্কা কর, তবে তাদের সাথে সাবধানতার সাথে থাকবে আল্লাহ তা’আলা তাঁর সম্পর্কে তোমাদের সতর্ক করেছেন। এবং সবাই কে তাঁর কাছে ফিরে যেতে হবে। (3:28)
তাদেরকে পরিত্যাগ করুন, যারা নিজেদের ধর্মকে ক্রীড়া ও কৌতুকরূপে গ্রহণ করেছে এবং পার্থিব জীবন যাদেরকে ধোঁকায় ফেলে রেখেছে। (6:70)
জালেম সেদিন আপন হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি রসূলের সাথে পথ অবলম্বন করতাম। হায় আমার দূর্ভাগ্য, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। আমার কাছে উপদেশ আসার পর সে আমাকে তা থেকে বিভ্রান্ত করেছিল। (25 :: 27-29)
বন্ধুবর্গ সেদিন একে অপরের শত্রু হবে, তবে খোদাভীরুরা নয়। (43 :: 67)
আল্লাহ কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেছে এবং বহিস্কারকার্যে সহায়তা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে তারাই জালেম। ||Al-Mumtahina(60)::9||
সেদিন আকাশ হবে গলিত তামার মত। এবং পর্বতসমূহ হবে রঙ্গীন পশমের মত, বন্ধু বন্ধুর খবর নিবে না। যদিও একে অপরকে দেখতে পাবে। ||(70) :: 8-11||
যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাদেরকে আপনি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণকারীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবেন না, যদিও তারা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়। তাদের অন্তরে আল্লাহ ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং তাদেরকে শক্তিশালী করেছেন তাঁর অদৃশ্য শক্তি দ্বারা। তিনি তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। তারা তথায় চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। তারাই আল্লাহর দল। জেনে রাখ, আল্লাহর দলই সফলকাম হবে। ||Al-Mujadila (58)::22||
বন্ধুত্ব কাদের সাথে:
তোমাদের বন্ধু তো আল্লাহ তাঁর রসূল এবং মুমিনবৃন্দ-যারা নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং বিনম্র। আর যারা আল্লাহ তাঁর রসূল এবং বিশ্বাসীদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারাই আল্লাহর দল এবং তারাই বিজয়ী। (5:55-56)
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (9:119)