بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم
বোরখা ও মুখ ঢাকার ব্যাপারে শরিয়াতের বিধানঃ
কুরআনে কারীমের সাত আয়াত এবং হাদীসের প্রায় ৭০টি বর্ণনা দ্বারা জানা যায় যে, ইসলামী শরীয়তে মূল মাকসাদ এমন পর্দা,যার দ্বারা মহিলাদের চলাফেরা, তার পোশাক, তার বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যের কিছুই বেগানা পুরুষের দৃষ্টিগোচর হবে না।
এমন পর্দা পর্দাবৃত বাড়ি এবং সংশ্লিষ্ট পর্দার দ্বারাই সম্ভব। এটাই মহিলাদের আসল স্থান। এটিই পর্দার প্রথমস্তর। যা পবিত্র কুরআনে স্পষ্ট ভাষায় বর্ণিত হয়েছে।
১) “আর তোমরা অবস্থান কর তোমার বসবাসের গৃহে। নিজেদের মুর্খতার যুগের মহিলাদের মত প্রকাশ করো না।” (সূরা আহযাব-৩৩)
এ আয়াত কি প্রকাশ করছে?
শুধু কাপড় চোপড় দিয়ে নিজেকে ঢেকে রাখাকেই যথেষ্ট মনে করবে না, বরং এমনভাবে পর্দা করবে যে, শরীরসহ কাপড়ও যেন পরপুরুষের সামনে প্রকাশিত না হয়। যেন কোন পরপুরুষের নজরই নারীর উপর নিবদ্ধ না হতে পারে। তবে প্রয়োজনের বিষয়টি ভিন্ন। তখন প্রয়োজনে বাহিরে যেতে পারবে।
২) “আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। (সূরাআহযাব-৫৩)
বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেন, উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ হলেন সকল মুমিনের মা। অথচ তাঁদের সাথেই লেনদেন বা কথা-বার্তা বলতে হলে পর্দার আড়াল থেকে করতে বলা হয়েছে। তাহলে অন্যান্য সাধারণ বেগানা নারীদের ক্ষেত্রে হুকুমটি কত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত তা তো সহজেই অনুমেয়।
লক্ষ্য করুন!
প্রথম আয়াতের মাঝে মহিলাদের ঘর থেকে বের হতেই নিষেধ করা হয়েছে প্রয়োজন ছাড়া। আর দ্বিতীয় আয়াতে যদি কোন পরপুরুষের মহিলাদের কাছে কোন চাওয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে পর্দার আড়াল থেকে চাওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এই হল পর্দা বিষয়ক প্রথম নির্দেশনামূলক আয়াত।
দ্বিতীয় নির্দেশনামূলক আয়াত ও হুকুম
প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়ার অনুমোদন দেয়া হয়েছে পর্দার সাথে।
সেই পর্দার পরিমাণ কতটুকু?
ঘরে যেভাবে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে ঠিক সেভাবেই বাহিরে বের হতে চেষ্টা করবে এমন নির্দেশনা থাকাই কি যৌক্তিক নয়? যেখানে ঘর থেকে বের হতেই নিষেধ করা হয়েছে, সেখানে বাহিরে চেহারার সৌন্দর্য প্রকাশ করে বের হওয়ার অনুমতি কিভাবে দেয়া হতে পারে?
এ কারণেই নির্দেশনা এসেছে যে, এমন বড় কাপড় সারা শরীরে আবৃত করে বের হবে যে, শরীরের কোন অংশ বাহিরে প্রকাশিত না হয়। চেহারা, হাত-পা, মোটকথা, শরীরের কোন অংশ ও সাজগোজের সরঞ্জাম প্রকাশিত যেন না হয়।
“হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। [মাথার দিক থেকে] এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।” (সূরাআহযাব-৫৯)
এ আয়াতে মহিলাদের জন্য ঘর থেকে বের হওয়ার পদ্ধতি শিখানো হয়েছে। কোন প্রয়োজনীয় কারণে ঘর থেকে বের হওয়ার সময়ও পর্দাহীন হবে না। বরং সে সময়ও স্বীয় চেহারার উপর পর্দা টেনে নিবে। যাতে করে চেহারা কারো দৃষ্টিগোচর না হয়।
কুরআনে কারীমে এমন স্পষ্ট শব্দে চেহারার উপর চাদর টেনে নেয়ার নির্দেশ থাকা সত্বেও ভিন্ন বক্তব্য দেয়ার কি সুযোগ আছে? যেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, চেহারার উপর চাদর টেনে নিবে। যাতে করে কেউ তার চেহারা দেখতে না পারে। সেখানে মুখ খুলে রাখার সুযোগ থাকার কথা কিভাবে বলা যায়? এটি কি কুরআনের আয়াতের সরাসরি খেলাফ হচ্ছে না?
উক্ত আয়াতের কারণেই মুখ ঢেকে রাখা মুসলিম নারীদের উপর ফরজ হয়েছে। এর বিপরীত করা জায়েজ নয়।
এই পর্দাই ইসলামের শুরু যুগ থেকে নিয়ে আজো পর্যন্ত দ্বীনদার মুসলিমদের মাঝে জারি আছে।
কয়েকটি হাদীস দেখা যেতে পারে-
১)হযরত আব্দুল খায়ের বিন সাবেত বিন কায়েস বিন শাম্মাস তার পিতা, তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে, একদা এক মহিলা রাসূল সাঃ এর কাছে এলেন।যাকে উম্মে খাল্লাদ বলা হয়। তিনি এমতাবস্থায় এলেন যে, তার চেহারা পর্দাবৃত ছিল। সে এসে তার নিহত সন্তানের ব্যাপারে অভিযোগ জানায়। তখন কতিপয় সাহাবী তাকে বলেন,“তুমি তোমার ছেলের ব্যাপারে অভিযোগ দাখিল করতে এসেছে, তারপরও তুমি পর্দাবৃত হয়ে এলে?” তখন উম্মে খাল্লাদ বলেন, যদিও আমার ছেলের উপর বিপদ এসেছে,এর মানে তো আমার লজ্জা শরমেরও বিপদ আসেনি। (সুনানে আবু দাউদ,হাদীস নং-২৪৮৮)
২)হযরত উম্মে সালামা রাঃ বলেন, যখন কুরআনে কারীমের এ আয়াত তথা “তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। [মাথার দিক থেকে]” –(সূরা আহযাব-৫৯) নাজিল হয়, তখন আনসারী মহিলারা স্বীয় ঘর থেকে এমনভাবে বের হতো যেন তাদের মাথায় কাক বসে আছে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১০১)
৩)হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল রাসূল সাঃইরশাদ করেছেন,নারী জাতি হল আপাদমস্তক সতর। যখনি সে বের হয়, তখনি শয়তান তাকে চমৎকৃত করে তোলে। {সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১৭৩, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-২০৬৫, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৬৮৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৫৯৮}
৪) হযরত আয়শা সিদ্দিকা রাঃ বাইতুল্লাহ তওয়াফ করতেন পর্দাবৃত অবস্থায়। {মুসন্নাফআব্দুর রাজ্জাক, হাদীসনং-৮৮৫৯
সূরা আহযাবের ৫৯ নং আয়াত দ্বারা বোরকার বিধান প্রমাণিত হয়। ইরশাদ হয়েছে,‘হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদের,আপনার কন্যাদের ও মুমিনদের নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের জিলবাবের একাংশ নিজেদের (মুখের) উপর নামিয়ে দেয়।’-সূরা আহযাব : ৫৯
‘জিলবাব’অর্থ বড় চাদর, যা দ্বারা মুখমন্ডল ও পূর্ণ দেহ আবৃত করা যায়।-আলজামি লিআহকামিল কুরআন, কুরতুবী১৪/২৪৩
শত শত বছর যাবৎ মুসলিম জাহানের সর্বত্র যে দ্বীনদার নারীগণ নেকাব ও বোরকা পরিধান করে আসছেন তাঁরা এই জিলবাব ধারণের বিধানই পালন করছেন।
সূরা আহযাবের ৩৩,৫৩ ও ৫৯ নম্বর আয়াত ছাড়াও সূরা নূরের ৩১ নম্বর আয়াত এবং বুখারী-মুসলিমসহ অন্যান্য হাদীসের কিতাবের সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে ‘পরপুরুষের সামনে নারীর মুখমন্ডল আবৃত রাখা আবশ্যক।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “ইহরাম গ্রহণকারী নারী যেন নেকাব ও হাতমোজা পরিধান না করে।”–সহীহ বুখারী ৪/৬৩, হাদীস : ১৮৩৮
এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে মেয়েরা তাদের হাত ও মুখমন্ডল আবৃত রাখতেন। এ কারণে ইহরামের সময় নেকাব ও দস্তানা না পরার আদেশ করতে হয়েছে।
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে তাঁর হজ্বের বিবরণে বলেছেন, ‘ইহরামে কারণে তারা নেকাব খোলা রাখতেন, কিন্তু যখন পুরুষেরা নিকট দিয়ে অতিক্রম করত তখন তারা মুখমন্ডল আবৃত করে ফেলতেন। তারা চলে যাওয়ার পর নেকাব তুলে ফেলতেন।’-মুসনাদে আহমদ ৬/৩০; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১৮৩৩; সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস : ১৭৫৭
আসমা বিনতে আবু বকর রা. বলেন, ‘আমরাপুরুষদের সামনে মুখমন্ডল আবৃত রাখতাম।…’-আল মুসতাদরাক, হাকিম ১/৪৫৪
ফাতিমা বিনতুল মুনযির রাহ. বলেন, ‘আমরা আসমা বিনতে আবু বকর রা.-এর সাথে ইহরাম অবস্থায় থাকাকালে আমাদের মুখমন্ডল ঢেকে রাখতাম।’-আল মুয়াত্তা,ইমাম মালেক ১/৩২৮; আলমুসতাদরাক, হাকিম ১/৪৫৪
আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রাহ. বলেন-‘সঠিকতর সিদ্ধান্ত এই যে, নারীর জন্য পরপুরুষের সামনে দুই হাত,দুই পা ও মুখমন্ডল খোলা রাখার অবকাশ নেই।’-মাজমুউল ফাতাওয়া ২২/১১৪
ইবনুল কাইয়িম রাহ. বলেন, ‘নারী নামায আদায়ের সময় দুই হাত ও মুখমন্ডল খোলা রাখতে পারেন, কিন্তু এভাবে বাজারে ও লোকের সমাগমস্থলে যাওয়ার অবকাশ নেই।’-ই’লামুল মুয়াক্কিয়ীন ২/৪৭
শায়খইবনে বায রাহ., শায়খইবনে উছাইমীন ও শায়খ ইবনে জিবরীনও একই ফতোয়া দিয়েছেন। দেখুন : রিসালাতুনফিলহিজাবি ওয়াসসুফূর, পৃ.১৯; ফাতাওয়াউলামাইল বালাদিল হারাম পৃ. ১১৬৯
বিখ্যাত তাফসীরকার ইবনে কাছীর রাহ. বলেন, সূরা আননুরঃ ৩১নং আয়াতের অর্থ, “পরপুরুষের সামনে নারী তার কোনো প্রকারের সৌন্দর্য প্রকাশ করবে না। তবে যা আবৃত রাখা সম্ভব নয় তার কথা আলাদা।” এর দৃষ্টান্ত দিয়ে ইবনে মাসউদ রা. বলেছেন, ‘চাদরও কাপড়।’
অর্থাৎ আরবের নারীগণ যে বড় চাদরে তাদের পরনের কাপড় ঢেকে বের হতেন এবং কাপড়ের নীচের অংশ, যাচলার সময় চাদরের নীচ দিয়ে প্রকাশিত হয়ে যেত তা যেহেতু ঢেকে রাখা সম্ভব নয় তাই এতে কোনো দোষ নেই।
‘হাসান(বসরী), (মুহাম্মাদ) ইবনে সীরীন, আবুল জাওযা, ইবরাহীম নাখায়ী প্রমুখ মনীষীও অনুরূপ ব্যাখ্যা করেছেন।’-তাফসীরুল কুরআনিল আজীম ৩/৩১২
“ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবংতাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে”। (সূরা নূর-৩১)
এ আয়াতে স্পষ্টভাষায় সৌন্দর্যকে লুকাতে আদেশ দেয়া হয়েছে। যেটা হল পর্দা করার মূল হাকীকত।
সতর ঢাকা আর পর্দা করা আলাদা ২টি বিষয়। মুখ ও হাত ঢাকা পর্দার অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ এ দুটি অংশ সতরের অন্তর্ভূক্ত নয়। কিন্তু পর্দার অন্তর্ভূক্ত। এ কারণেই নামাযরত অবস্থায় হাত (কবজি পর্যন্ত) ও মুখ ঢাকতে হয় না। এসব খোলা রেখেই নামায হয়ে যায়। কারণ এসব সতর নয়। আর নামাযে সতর ঢাকা ফরজ।
অর্থাৎ নামাজে মুখ, হাতের কবজি, পায়ের পাতা বাদে সমস্ত শরীর ঢাকা ফরয।
কিন্তু বাহিরে বের হওয়ার সময় যেহেতু সতরের সাথে সাথে পর্দা রক্ষা করাও ফরজ, এসব ঢেকে রাখা ফরজ।
মোটকথা হল এই যে,মহিলাদের জন্য এটি কিছুতেই জায়েজ নয় যে, খোলাবাজারে তারা মুখ খুলে ঘুরে বেড়াবে। নিজের সৌন্দর্য মানুষকে দেখিয়ে বেড়াবে। যেহেতু সৌন্দর্যের মূলই হল চেহারা। চেহারা দেখেই মূলত সৌন্দর্যের মাপকাঠি নির্ধারণ হয়ে থাকে। সুতরাং এটি প্রদর্শন কিভাবে জায়েজ হতে পারে?
এ কারণেই ইসলামী শরীয়ত জিনার দরজা বন্ধ করার জন্য পরপুরুষের সামনে চেহারা খোলাকে হারাম সাব্যস্ত করেছে।
উপরোক্ত বিস্তারিত আলোচনা জানা যাচ্ছে যে, মহিলাদের পর্দার যে হুকুম দেয়া হয়েছে, তাতে চেহারাও দাখিল। শুধু তাই নয়,মূলত আসল হুকুম চেহারা ঢাকার উপরই। কারণ চেহারাই সৌন্দর্যতার মূল। সেই সাথে মহিলাদের উত্তম পোশাক, পরিহিত সাজ সরঞ্জামও দাখিল।
আর চেহারা ও পোশাক-আশাকের পর্দা রক্ষা প্রচলিত বোরকা বা এ জাতীয় কাপড় দ্বারা অর্জিত হয়ে থাকে।
এ কারণেই মুসলিম নারীদের জন্য পর্দার ফরজিয়্যাত আদায় করার জন্য বোরকা বা এ জাতীয় শরীর ঢেকে থাকে এমন পর্দাযুক্ত কাপড় পরিধান করা জরুরী।
এ কারণেই পবিত্র কুরআনে প্রথমে মহিলাদের ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করাহয়েছে। তবে যদি কোন প্রয়োজনে বের হয়ও, তাহলে বোরকা বা এ জাতীয় কাপড় দিয়েনিজেকে আবৃত করে নিতে বলা হয়েছে।
তবে ৩টি সূরত এ নির্দেশনা থেকে পৃথক। যথা-
১- এমন প্রয়োজন যাতে করে চেহারা ঢাকলে নিজের ক্ষতি হবে। যেমন ভীরের মাঝে চলার সময়।
২- এমন প্রয়োজন যাতে চেহারা ঢাকা থাকলে অন্যের ক্ষতি হবে। যেমন সাক্ষ্য প্রদান করার সময়।
৩- কাজ করা, বা কর্মক্ষেত্রে ডিউটি করার সময় অনিচ্ছায় চেহারা খুলে গেলে। এতে গোনাহ হবে না।
তবে এ তিন সূরতের ক্ষেত্রেই পুরুষদের জন্য বিধান হল, তারা নিজেদের চোখকে নিচু করে রাখবে। মহিলাটির দিকে তাকিয়ে থাকবে না। মহিলার দিকে দেখা তার জন্য হারাম।
চেহারা ঢেকে রাখার বিধানটি যুবতী নারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। নতুবা বৃদ্ধ নারীদের জন্য চেহারা বা হাত খোলার সুযোগ সম্বলিত অন্য আয়াতে বিদ্যমান রয়েছে।
উল্লেখিত আলোচনা দ্বারা আশা করি একথা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, মহিলাদের জন্য পরপুরুষের সামনে মুখ হাত খোলা রাখা আমভাবে জায়েজ বলা শরীয়ত সম্মত নয়। বরং চেহারা ও হাত খোলার সুযোগ নির্দিষ্ট কিছু সূরতের সাথে খাস। সেসব বিশেষ সূরত ছাড়া বেগানা পুরুষদের সামনে হাত মুখ খোলা কিছুতেই জায়েজ নয়।
দ্বীন না মানার গোনাহ থেকে দ্বীনী বিষয়কে অস্বিকার করা মারাত্মক গোনাহ। ক্ষেত্রে বিশেষে তা কুফরী পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। তাই পর্দাসংক্রান্ত ব্যাপারে নিজের মনগড়া মন্তব্য করা থেকে সতর্ক থাকা উচিত সকল মুসলমানদের।
মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে বুঝার তাওফিক দান করুন এবং মা বোনদেরকে মহান আল্লাহ্র হুকুমকে ভয় করে যথাযথভাবে পর্দা করার তাওফিক দান করুন।
পর্দার বিধানঃ১ম পর্বের লিঙ্ক Part 01
পর্দার বিধানঃ২য় পর্বের লিঙ্ক Part 02
পর্দার বিধানঃ৩য় পর্বের লিঙ্ক Part 03
৪ পর্বের নোট সম্পূর্ণ পাবেন এখানে। মাত্র ১৫ পৃষ্ঠার ছোট একটি লিখা। আশা করি আমাদের কাজে দিবে। ওয়ামা তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ।
https://drive.google.com/file/d/0B_x5saFR_8ZdN25sQ2g0a2NKajA/edit?usp=sharing
সহায়ক আর্টিকেলঃ
http://www.alkawsar.com/article/747
http://www.alkawsar.com/article/27
http://www.alkawsar.com/article/1676
http://www.alkawsar.com/article/1660
সমাপ্ত
আল্লাহ আমাদের সবাইকে তার দ্বীনের সঠীক বুঝ দান করুন।
[This article written and compiled by Brother Sabet Bin Mukter and Published in his Facebook Account]






