দুআ ১:
আবু কুরায়ব (রহঃ) ….. আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দাউদ (আঃ) এর অন্যতম দু’আ ছিল এই যে, তিনি বলতেনঃ
– اَللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ وَالْعَمَلَ الَّذِي يُبَلِّغُنِي حُبَّكَ – اَللَّهُمَّ اجْعَلْ حُبَّكَ أَحَبَّ إِلَىَّ مِنْ نَفْسِي وَأَهْلِي وَمِنَ الْمَاءِ الْبَارِدِ
হে আল্লাহ! আমি চাই তোমার মুহাব্বত, যারা তোমাকে মুহাব্বত করে তাদের মুহাব্বত, আর চাই সেই আমল যা আমাকে পৌছিয়ে দেয় তোমার ভালবাসা।
হে আল্লাহ! কর তোমার মুহাব্বত আমার কাছে আধিক প্রিয় আমার প্রাণ থেকে, আমার পরিজন থেকে এবং শীতল পানি থেকেও।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দাউদ (আঃ) এর আলোচনা করতেন তখন বলতেনঃ তিনি ছিলেন মানব জাতীর মধ্যে সবচেয়ে বেশী ইবাদতকারী। [সূনান তিরমিজী (ইফাঃ) হাদিস নম্বরঃ ৩৪৯০]
দুআ ২:
আবু হুরায়রা (রা.) আল্লাহর রাসূল ﷺ থেকে এতো সুন্দর একটি দো’য়া বর্ণনা করেছেন, যা শিখে নিতে আমি প্রত্যেককে অনুরোধ করবো —
اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ جَارِ السُّوءِ، وَمِنْ زَوْجٍ تُشَيِّبُنِي قَبْلَ الْمَشِيْبِ، وَمِنْ وَلَدٍ يَكُونُ عَليَّ رَبّاً، وَمِنْ مَالٍ يَكُونُ عَلَيَّ عَذَابَا، وَمِنْ خَلِيْلٍ مَاكِرٍ عَيْنُهُ تَرَانِي، وَقَلْبُهُ يَرْعَانِي؛ إِنْ رَأَى حَسَنَةً دَفَنَهَا، وَإِذَا رَأَى سَيِّئَةً أَذَاعَهَا-
অর্থঃ “হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই দুষ্টু প্রতিবেশী থেকে, এমন স্ত্রী থেকে যে আমাকে বৃদ্ধ করে দিবে বৃদ্ধ হওয়ার পূর্বেই, এমন পুত্র থেকে যে আমার উপর কর্তৃত্ব করবে, এমন সম্পদ থেকে যা আমার জন্য শাস্তির কারণ হবে, এবং এমন ধূর্ত বন্ধু থেকে যার স্থির (কু) দৃষ্টি রয়েছে আমার উপর-যার হৃদয় আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করছে-যদি সে আমার ভালো কিছু দেখে তবে তা দাফন করে, এবং খারাপ কিছু দেখলে তা ছড়িয়ে দেয়।” [তাবারানী, আদ দো‘য়া, ৩/১৪২৫/১৩৩৯]
দুআ ৩:
যায়িদ ইবনু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি তোমাদের কাছে অবিকল তাই বলছি যা রাসুলুল্লাহ ﷺ স্বয়ং বলতেন। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ ﷺ বলতেনঃ
اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَالْهَرَمِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ اَللَّهُمَّ آتِ نَفْسِي تَقْوَاهَا وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَنْ زَكَّاهَا أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلاَهَا اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عِلْمٍ لاَ يَنْفَعُ وَمِنْ قَلْبٍ لاَ يَخْشَعُ وَمِنْ نَفْسٍ لاَ تَشْبَعُ وَمِنْ دَعْوَةٍ لاَ يُسْتَجَابُ لَهَا
অর্থঃ “হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই, অসামর্থতা, অলসতা, হীনমন্যতা, কার্পণ্য ও বার্ধক্য থেকে এবং কবরের আযাব থেকে।
হে আল্লাহ! আমার আত্মাকে তাকওয়া দান করুন এবং আত্মাকে পরিশুদ্ধ করুন। আপনি আত্মার সর্বোত্তম পরিশোধনকারী, আপনিই এর মালিক ও এর অভিবাবক।
হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই এমন এলেম থেকে যা কোন উপকারে আসবেনা এবং এমন অন্তর থেকে যা আল্লাহর ভয়ে ভীত হয় না; এমন আত্মা থেকে যা কখনো পরিতৃপ্ত হয়না। এবং এমন দুআ থেকে যা কবুল হয় না।” [সহীহ মুসলিম (ইফাঃ) হাদিস নম্বরঃ ৬৭১১]
দুআ ৪:
আবূ উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একদিন রাসূলুল্লাহ ﷺ এত বেশি দু’আ করলেন যে, আমরা এর কিছু স্মরণ রাখতে পারলাম না। আমরা বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনিতো অনেক দু’আ করেছেন কিন্তু আমরা তো তার কিছুই স্মরণ রাখতে পারলাম না।
তিনি বললেনঃ এক দু’আ তোমাদের বলব কি যা এই সবকিছু সমন্বিত করে নিবে? বলবেঃ
اَللَّهُمَّ إِنَّا نَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ مَا سَأَلَكَ مِنْهُ نَبِيُّكَ مُحَمَّدٌ وَنَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا اسْتَعَاذَ بِكَ مِنْهُ نَبِيُّكَ مُحَمَّدٌ وَأَنْتَ الْمُسْتَعَانُ وَعَلَيْكَ الْبَلاَغُ وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে সেই সব কল্যাণ প্রার্থনা করি, যে সব কল্যাণের প্রার্থনা তোমার কাছে তোমার নবী মুহাম্মাদ ﷺ করেছেন। আর সে সব অনিষ্ঠ থেকে পানাহ চাই, যেসব অকল্যান থেকে তোমার নবী মুহাম্মাদ ﷺ পানাহ চেয়েছেন। তুমিই তিনি যার কাছে সাহায্য পাওয়া যায়। তোমারই উপর নির্ভর যথেষ্ট। কোন ক্ষমতা নেই, কোন শক্তি নেই আল্লাহ ছাড়া। [গ্রন্থঃ সূনান তিরমিজী (ইফাঃ) হাদিস নম্বরঃ ৩৫২১]
দুআ ৫:
রাসূলুল্লাহﷺ দুয়া করতেন,
اَللَّهُمَّ أَحْسِنْ عَاقِبَتَنَا فِي الأُمُورِ كُلِّهَا، وَأَجِرْنَا مِنْ خِزْيِ الدُّنْيَا وَعَذَابِ الآخِرَةِ
অর্থঃ হে আল্লাহ্! আমাদের প্রতিটি বিষয়ে আপনি শুভ পরিণতি দান করুন এবং দুনিয়াবী লাঞ্ছনা ও আখেরাতের আযাব থেকে মুক্তি দান করুন।
ইমাম আহমাদ ও ইমাম তাবরানি আরো বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَنْ كَانَ ذَلِكَ دُعَاءَهُ مَاتَ قَبْلَ أَنْ يُصِيبَهُ الْبَلَاءُ
যে ব্যক্তি এই দুয়ার ইহতিমাম করবে, (দুনিয়াবী লাঞ্ছনাকর) বালা মুসিবাতে আক্রান্ত হওয়ার পূর্বেই আল্লাহ্ তাকে মৃত্যু দান করবেন।
[মাজমাউয যাওয়ায়িদ ১০/১৮১]






